শিরোনাম
Cómo hacer un bong con una botella de agua sin papel de aluminio Качественная поставка бетона по Краснодару কালিয়াকৈরে পরিবেশ অধিদপ্তর ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২টি কারখানাকে জরিমান। বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে তুহিনের মুক্তির দাবীতে ডিমলায় বিক্ষোভ মিছিল। রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্ততায় কালিয়াকৈরে ক্যাম্পেইন ও লিফলেট বিতরণ। ঠাকুরগাঁওয়ে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসে বিনামুল্যে স্বাস্থ্যসেবা। নারী বিষয়ক সংস্কার আইন বাতিলের দাবিতে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ। গৃহবধু হত্যা মামলার আসামী না ধরলে বালিয়াডাঙ্গী থানা ঘেরাও করার ঘোষণা। দুর্গাপুরে বিএনপি’র বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে বিএনপির  বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা। কমলগঞ্জে বর্ণীলসাজে মণিপুরীদের ঐতিহ্যগত “লাই-হরাউবা” উৎসব।
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৭ অপরাহ্ন

বগুড়ায় চাঞ্চল্যকর ফরিদুল হত্যা মামলার ৫ আসামী গ্রেফতার-ভোরের কণ্ঠ।

মোঃ আব্দুর রাজ্জাক মনির,শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধি / ৩৪০ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২১

বগুড়ার শেরপুরে ইটালী মধ্যপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম (৪৮) হত্যা মামলার ঘটনায় জড়িত ০৫ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে শেরপুর থানা পুলিশ। পুলিশ এ হত্যাকান্ডের ০৭ দিনের মাথায় মামলার রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হলো।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ এবং টাকা পয়সা লেনদেনের দেনা-পাওনাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ডটি সংঘটিত করেছে আসামীরা।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন হলদিবাড়ী আটাপাড়া গ্রামের মৃত মান্নান মন্ডলের পুত্র মোঃ ওমর ফারুক (৩৫), ইটালী মধ্যপাড়া গ্রামের দুলাল হোসেনের পুত্র মোঃ ফারুক আহম্মেদ (৩০), একই গ্রামের মৃত রসুল প্রাং এর পুত্র আঃ রাজ্জাক (৫৮), মৃত কেরামত আলীর পুত্র মোঃ জিয়াউর রহমান জিয়া (৪০) ও তার স্ত্রী মোছাঃ শাপলা খাতুন (৩৫)। উল্লেখ্য যে, মোঃ ওমর ফারুক ভিকটিম ফরিদুলের সৎ শ্যালক, ফারুক আহম্মেদ ভিকটিমের আপন ভাতিজা, মোঃ জিয়াউর রহমান জিয়া ও মোছাঃ শাপলা খাতুন ভিকটিমের আপন ছোট ভাই ও ভাই বৌ এবং আব্দুর রাজ্জাক ভিকটিমের চাচা।

উল্লেখ্য গত ৫ জানুয়ারী, ২০২১ খ্রিঃ তারিখ সন্ধ্যা ০৭টার সময় নিজ বাড়ীতে নৃশংসভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হন ইটালী মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত কেরামত আলীর পুত্র রড ও সিমেন্ট ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম (৪৮)। ফরিদুল ইসলাম ব্যবসার পাশাপাশি একজন কৃষকও। সে স্থানীয় ছোনকা বাজারের একজন সিমেন্ট ব্যবসায়ী। মায়ের জমি-জমা নিয়ে ফরিদুলের অন্যান্য ভাইদের সাথে দ্বন্দ্ব ছিল। ফরিদুল কৌশলে তার মায়ের এবং বোনদের নিকট থেকে বসতবাড়ীর এবং ছোনকা বাজারের পাশে মূল্যবান জায়গা রেজিস্ট্রি করে নেন। ফলে ভাইদের সাথে তার চরম শত্রুতা শুরু হয়।

অন্যদিকে ফরিদুল তার সৎ শ্যালক ওমর ফারুকের নিকট থেকে ০৩ লক্ষ টাকার জমি কট (বন্ধক) নিয়েছিল। এ টাকা ফেরৎ দেওয়া নিয়ে তার সাথে শত্রুতা শুরু হয়। ফলে ভিকটিমের ভাই এবং সৎ শ্যালক মিলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। গত ঈদ-উল আযহা/২০২০ খ্রিঃ এর পর ফরিদুল তার একমাত্র পুত্র ইয়ানুর রহমান শাওন (১০) কে পড়াশুনার জন্য ঢাকার সাভারে তার মেয়ের বাড়ীতে রাখেন। তিনি স্ত্রীসহ নিজবাড়ীতে বসবাস করতেন। তার স্ত্রী গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ খ্রিঃ তারিখে তার ননদকে ডাক্তার দেখানোর জন্য ঢাকায় যান এবং মেয়ের বাড়ীতে উঠেন।

বাড়ীতে কেউ না থাকার সুবাদে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা এ সময় কে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উপযুক্ত সময় হিসেবে বেছে নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্ধ্যা ০৬.৩০টায় ফারুক আহম্মেদ ধারালো চাকুসহ তার চাচীর বাড়ীর ভিতরে অবস্থিত ল্যাট্রিনের উপর দিয়ে ভিকটিমের বাসায় প্রবেশ করে অন্ধকার স্থানে ওৎ পেতে থাকে। ফরিদুল সারাদিন মাঠে কৃষি জমিতে সেচের কাজ করে সন্ধ্যার পর বাসায় ফিরলে বাড়ীর ভিতরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ফারুক আহম্মেদ তাকে ধারালো চাকু দিয়ে স্বজোরে মাথার পিছনে দুইটি আঘাত করে।

অন্যদিকে হত্যার সাথে জড়িত অন্যরা দরজা দিয়ে প্রবেশ করে ভিকটিম ফরিদুলকে ধরে ফেলে এবং বটি ও চাকু দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যাকারীরা মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। সংবাদ পেয়ে শেরপুর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করেন।

ঘটনার পর প্রথম দিকে কোন ক্লু-ই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। মৃত ফরিদুলের স্ত্রী সন্তান কিংবা কোন আত্মীয় স্বজনদের কেহ দিতে পারছিল না কোন তথ্য বা সন্দেহভাজনের নাম। ঘটনার পরদিন মৃতের স্ত্রী ইসমতআরা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন।

বগুড়ার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোঃ আলী আশরাফ ভুঞা বিপিএম প্রত্যক্ষ দিক-নির্দেশনায় শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ গাজিউর রহমান এর নেতৃত্বে শেরপুর থানার ওসি মোঃ শহিদুল ইসলাম, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোঃ আবুল কালাম আজাদ ও মামলার তদন্তকারী অফিসার মোঃ সাচ্চু বিশ্বাসদের বিজ্ঞান ভিত্তিক ও বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশি তদন্ত ও প্রযুক্তির সহায়তায় দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রমে সপ্তাহের ব্যবধানে ফরিদুল হত্যার মূল রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হন শেরপুর থানা পুলিশ।

সন্দেহভাজন ওমর ফারুকের ফোন থেকে হঠাৎ করে গত ০৮ জানুয়ারি সকাল ১০টায় তার স্ত্রীর ফোনে ফোন আসে। অপরিচিত কণ্ঠ বলে উঠে “তোর স্বামীর আশা ছেড়ে দেয়, আর কোনদিন দেখতে পাবি নাচ্। পাশে থেকে ওমর ফারুক বলতে থাকে “আমাকে মাইক্রোতে করে হাত, পা ও চোখ বেধে তুলে নিয়ে যাচ্ছেচ্।

বিষয়টি ওমর ফারুকের স্ত্রী তাৎক্ষণিক পুলিশকে জানালে পুলিশ তার ওপর গোয়েন্দা নজরদারী করতে থাকে। পরে গতকাল সকালে ওমর ফারুককে মানিকগঞ্জ থেকে উদ্ধার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যাকান্ডের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গত ১৩ জানুয়ারী ২০২১ খ্রিঃ তারিখ রাতে উল্লিখিত অফিসার ও ফোর্সের সমন্বয়ে একটি চৌকস টিম ইটালী গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে অবশিষ্ট ০৪(চার) জন আসামীকে তাদের নিজ নিজ বাড়ী হতে গ্রেফতার করে।

আসামীরা প্রত্যেকে ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। আজ ০২ জন আসামীকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য এবং বাঁকি ০৩ জন আসামীকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে উপস্থাপন করা হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর