সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের তামাই পশ্চিম পাড়া গ্রামের শামসুল হকের মেয়ে মরিয়ম খাতুন এর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে মাঠে নেমেছে পিবিআই। রোববার (২৬ শে ডিসেম্বর) বিকেল চারটায় সময় বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের তামাই গ্রামের কুয়েত পাড়া মরিয়ম খাতুন এর স্বামীর বাড়িতে পিবিআই তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
এ সময় উপস্থিত এলাকাবাসীর সম্মুখে পিবিআই কর্মকর্তা মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে মরিয়ম এর বসত ঘরের মৃত্যুর স্থানগুলো বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করেন এবং আসামিদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে এসময় অভিযুক্ত শাহিন বুদ্ধ এবং ইসমাইল কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে নানা অজুহাতে কথা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আসামী তানিয়া খাতুন সহ অন্যান্যদের হাজির করতে বলেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এর পুলিশ সুপার মহোদয়ের নেতৃত্বে ইনেসপেক্টর গোলাম কিবরিয়া তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে বিষয়ে উপস্থিত স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, বেলকুচি থানা পুলিশের মাধ্যমে মরিয়ম এর মা সেলিনা বেগম ন্যায় বিচার না পেয়ে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছে আমরা এলাকাবাসী দাবী জানাই মরিয়ম এর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে কোনরকম পক্ষপাতিত্ব বা টাকার বিনিময় কোনভাবেই এই হত্যা মামলা যেন প্রভাবিত না হয়। আমরা এলাকাবাসী এই হত্যার ন্যায় বিচার চাই।
এ বিষয়ে মামলার বাদী সেলিনা বেগম জানান, আমার নাবালিকা মেয়ে মরিয়ম খাতুন কে নানাভাবে ফুঁসলিয়ে আব্দুর রহমান চলতি বছরের ১৯ শে মে সিরাজগঞ্জ নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ের গোপনে এভিট ডেভিট এর মাধ্যমে বিবাহ করে। আমরা গরীব হওয়ায় টাকার জন্য আইনের আশ্রয় নিতে পারি নাই। বিয়ের প্রায় পাঁচ মাস ঘর সংসার করার পর আমাদেরকে জানায়, মরিয়মের স্বামী বাড়িতে ঠিক মত থাকে না এবং বাড়ির অন্যান্য লোকজনের ব্যবহার ভালো না, তাদের অনৈতিক কার্যকলাপ দেখে প্রতিবাদ করলে হত্যার হুমকি দেয়। তাদের কার্যকলাপ বিষয়ে অনেকবার পারিবারিকভাবে সালিশ হয়েছে তবুও সংশোধন হয়নি।
মরিয়মের জা তানিয়া ও স্বামী সাব্বিরের অবৈধ পরকীয়া সম্পর্কে মরিয়ম জেনে ফেলে এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৭ অক্টোবর রাত্রিতে কোন এক সময়ে মরিয়ম কে হত্যা করে মেঝেতে শুয়ে রাখে এবং বাড়ির লোকজন তার ঘরের মেঝেতে রক্ত লেগে থাকা স্থানগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে আলামত নষ্ট করে। মরিয়ম এর শরীরে হাতে পায়ে মুখে বুকে পিঠে পেটে গলায় আঘাতের কালো দাগ চিহ্ন দেখা যায়।
বেলকুচি থানা পুলিশ উপস্থিত থেকে এগুলো সুরতহাল লিখে নেয় , আমি বেলকুচিতে আমার মেয়ে মরিয়ম হত্যার মামলা দাখিল করি ১৮ই অক্টোবর। এ বিষয় একমাস পরে জানতে পারি হত্যা মামলা না নিয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে যাহার মামলা নং ২৬ তারিখ ১৮ ই অক্টোবর ২০২১ইং যার কারণে আমি ন্যায় বিচার পাইনি বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছি মামলাটি বর্তমানে আদালতের নির্দেশে পিবিআই এর তদন্তাধীন আছে। আশাকরি এ ব্যাপারে পিবিআই সুষ্ঠু তদন্ত করে মরিয়ম হত্যার রহস্য উদঘাটন করে ন্যায় বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বেলকুচি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, আদালতের নির্দেশে যদি কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন হয় সে বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।