সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ০৩:৩১ অপরাহ্ন

গুপ্তধনের সন্ধান দেওয়ার লোভ দেখিয়ে সন্তানের সামনে গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ!

মোঃ আনোয়ার হোসেন আকাশ,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ / ৪৪১ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ৬ মার্চ, ২০২২

গুপ্তধনের সন্ধান দেওয়ার লোভ দেখিয়ে সন্তানের সামনে গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ!


ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নের মধুপুর গুদাম পাড়া এলাকায় এক গ্রহবধুকে তার তিন বছরের শিশু সন্তানের সামনে এক গৃহবধূ (২৬) পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। গত শুক্রবার গভীর রাতে ওই ইউনিয়নের মিশন রেলগেট কোয়ার্টারে এই ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মধুপুর গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নারী একই এলাকার পুঞ্জিকা সাধক ও তান্ত্রিক প্রকাশ (ঝোল) ঐ নারীকে গুপ্তধনের সন্ধান দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এক মন্দিরে নিয়ে যায়। ওই তান্ত্রিক ঝোল সু-কৌশলে ওই নারীকে মিশন রেলগেট কোয়ার্টারে নিয়ে আসে ওই গৃহবধূর সন্তানকে পাশে রেখে তান্ত্রিক ঝোল তাকে ধর্ষণ করে।

পরে তার বন্ধু রুহিয়া মিশন রেল গেটম্যান সামিম (৩০) এনামুল হক (৩৭) মেজর (২৮) উজ্জল দাসকে (৩৫) ডেকে আনলে তারাও ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর ওই গৃহবধূ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ঘটনাটি তার আত্মীয়-স্বজনকে জানানোর পর শনিবার সকালে রুহিয়া থানায় মামলা করতে গেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউসুফ আলী ও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি মামলা না করার জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

অভিযুক্ত তান্ত্রিক ঝোল রুহিয়া মধুপুর এলাকার বাসিন্দা, আর সামিম রুহিয়া মিশন রেলগেটম্যান ও পীরগঞ্জ লোহাগাড়ার আব্দুল রাজ্জাকের ছেলে, এনামুল হক পিতা: ছুটু, মেজর পিতা: ডাউহই ওরফে মনিরউদ্দীন, উজ্জল দাস পিতা: পাউলুস দাস তারা দুজনেই রুহিয়া ঘনিবিষ্টপুর এলাকার বাসিন্দা।

সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য (সাবেক) বিনা রাণী জানান,  এই গৃহবধু গরীব। একই এলাকার সাধক ঝোল তাকে বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে মিশন রেল গেটে নিয়ে যায়। পরে গেটম্যানসহ চার যুবক তাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে গেলে বর্তমান ইউপি সদস্য ইউসুফ আলী আমাদের বাঁধা প্রদান করেন আর সমাধানের জন্য দুই দিন সময় নেন। আজ রবিবার সন্ধ্যায় বসার কথা আছে। অন্যদিকে ইউপি সদস্য ইউসুফ আলীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনটিও বন্ধ রেখেছেন।

রুহিয়া ঘনিবিষ্ণুপুর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক তসলিম উদ্দিন বলেন, ইউসুফ মেম্বার ওই নারীকে মামলা করতে নিষেধ করেন তৎসঙ্গে মুখ বন্ধ রাখার জন্য কিছু টাকা পয়সার প্রস্তাব দেন এবং তার ভাইয়ের বাসায় কয়েকদিন লুকিয়ে থাকার জন্য চাপ দেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক বাবু জানান, একটি মহিলার হারিয়ে যাওয়া। আবার পরের দিন সকালে খুজে পাওয়ার ঘটনা আমি শুনেছি। কিন্তু ধর্ষনের বিষয়টি আমি জানি না।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোছাঃ সুলতানা রাজিয়া বলেন, শিশু সন্তানের সামনে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনাটি খুবই দুঃজনক। আমি খোঁজ নিয়ে পুলিশ পাঠাচ্ছি। স্থানীয়ভাবে সমাধানের জন্য ওই গৃহবধূর পরিবারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় কোনও সমাধান হয় না। যারা এই জঘন্য কাজ করেছে বা যারা সমাধানের জন্য চাপ দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর