শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন

লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড।

মোঃ সোহেল হোসেন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ / ১৫৬ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০২২

লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড।


লক্ষ্মীপুর রামগতি উপজেলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রী মমতাজ বেগমকে হত্যার দায়ে স্বামী বশির মিস্ত্রিকে (৬০) আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তার এক হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়। বুধবার ২৩ মার্চ বেলা ১১ টার সময় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এই রায় প্রদান করেন।

জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, স্ত্রী হত্যার ঘটনা আদালতে বশিরকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্ত বশির রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের চরগাজী ইউনিয়নের দক্ষিণ টুমচর (আদর্শ গ্রাম) গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে। রায় ঘোষণার পর বশিরের চোখে মুখে চাপা আতঙ্ক দেখা গেছে। ঘোমড়া মুখেই পুলিশের সঙ্গে কিছু একটা বলছিল। যেন তার আকাশ জুড়ে আঁধার নেমে এসেছে। রায়ের সময় তার কোন আত্মীয়-স্বজনকে আদালতে দেখা যায়নি।

মামলার এজাহার সূত্র জানায় ২০০৬ সালে নোয়াখালী জেলার চরজব্বার ইউনিয়নের চরপানা উল্যা গ্রামের আলী হোসেনের মেয়ে মমতাজকে বশির বিয়ে করে। এটি বশিরের দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। প্রথম সংসারে তার দুই ছেলে ও চার মেয়ে রয়েছে।

বশির ও মমতাজ বেগমের সংসারে হোসেন আহম্মদ ও আপন নামে দুই ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে মমতাজকে বশির মারধর করতো। ঘটনাগুলো স্থানীয় ভাবে মিমাংসার জন্য একাধিবার সালিসি বৈঠকও করা হয়।

এরপরও মমতাজ বেগমের উপর নির্যাতন ও মারধর বন্ধ করা হয়নি। বিভিন্ন সময় মমতাজ বেগম তার বাবার বাড়ির লোকজনকে ফোন দিয়ে কান্না কাটি করতো। বশিরের আগের সংসারের ছেলে মেয়েরা মমতাজ বেগমকে ভালো চোখে দেখতো না।

এ দিকে পারিবারিক কলহের জের ধরেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ২০১৬ সালে ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে মমতাজকে বশির ঘর থেকে ডেকে বাড়ির অদূরে সয়াবিন ক্ষেতে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মমতাজের গলার ডান পাশে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। পরে বশির সেখান থেকে স্থানীয় টাংকি বাজারে যায়। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে খোঁজাখুঁজির নাটক রচনা করে।

নিজেই রেখে আসা সয়াবিন ক্ষেত থেকে লাশ উদ্ধার করেন এবং প্রচার শুরু করে কে বা কারা আমার স্ত্রী মমতাজকে হত্যা করে লাশ সয়াবিন ক্ষেতে ফেলে রেখে গেছে।

কিন্তু ঘটনাটি সন্দেহজনক হওয়ায় স্থানীয়রা তাকে আটক করে। পরে তাকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়। পরে নিহত মমতাজ বেগমের ভাই মোঃ জসিম বাদী হয়ে বশির ও অজ্ঞাত ৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি রামগতি থানা পুলিশ আদালতে বশিরের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। দীর্ঘ শুনানির পর ও ৮ আট জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এই রায় দেয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর