সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন

মাধবপুরে শিক্ষকদের বেতন ভাতা বন্ধ রেখে তৈরি করা হচ্ছে বাড়ি।

নাহিদ মিয়া,মাধবপুর(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি। / ২৫৬ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৪

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
হবিগঞ্জের মাধবপুরে শিক্ষকদের তিন মাসের বেতন ভাতা না দিয়ে বিলাসবহুল বাড়ি তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে সোমবার (৮ এপ্রিল) সকালে উপজেলার জগদীশপুর যোগেশ চন্দ্র হাইস্কুল এন্ড কলেজ এর পঁচিশ জন শিক্ষক ও কর্মচারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয় তহবিলের আর্থিক সংকটের কারণ দেখিয়ে গত তিন মাস যাবত শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও বোনাস দেওয়া হচ্ছে না।
অথচ বিদ্যালয়ের ফান্ডের টাকা দিয়ে  এরচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রধান শিক্ষকের জন্য বিলাসবহুল পাঁচ বেডরুম বিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে কোন ধরনের টেন্ডার ছাড়াই। শ্রেণী শিক্ষকদের হিসাবমতে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তারা শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে বেতন বাবদ প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা আদায় করে বিদ্যালয়ের তহবিলে জমা করেছেন।
এছাড়াও ২০২৩ সালের বকেয়া আরও ছয় লাখ টাকা বিদ্যালয়ের তহবিলে জমা করা হয়েছে। অথচ শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা না দিয়ে নিয়মবহির্ভূত ভাবে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ প্রধান শিক্ষকের বাসার নামে বিলাসবহুল প্রসাদ নির্মাণে ব্যাস্ত পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক।
প্রধান শিক্ষক জানুয়ারি পর্যন্ত বেশিরভাগ শিক্ষকের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে দাবি করলেও শিক্ষকরা তা অস্বীকার করেছেন। সরেজমিনে জগদীশপুর যোগেশ চন্দ্র হাইস্কুল এন্ড কলেজে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষকের জন্য ছয় কক্ষ ও দুই ওয়াশরুম  বিশিষ্ট একটি বাড়ির ছাদ ডালাইসহ আশি ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ভেতর থেকে ইটের শুড়কি ট্রাক্টর দিয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতির বাড়ির সামনে নিয়ে ফেলা হচ্ছে। এব্যাপারে জগদীশপুর যোগেশ চন্দ্র হাইস্কুল এন্ড কলেজ এর পরিচালনা কমিটির একাধিক সদস্যের সাথে যোগাযোগ করলে, তারা জানান, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক নিজেদের ইচ্ছেমতো স্কুল চালাচ্ছে। আমরা এই বিষয়ে কিছু জানি না।
একজন সদস্য জানান, আমি কোন মিটিংয়ে যাই না। কারণ সেখানে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম দেখে মেজাজ ঠিক থাকে না। প্রধান শিক্ষক মো: নূরুল্লা ভূইয়া জানান, সরকারের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী যে খাতে আয় সে খাতে ব্যয় করতে হবে। যে কারণে তহবিল সংকটের কারণে বেতন ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না।
তবে জানুয়ারি পর্যন্ত বেতন পেয়েছে বেশিরভাগ শিক্ষক। সভাপতির বাড়ির সামনে ইটের সুরকি নিয়ে ফেলার বিষয়ে তিনি বলেন এগুলো কিছু স্কুলের মাঠে ফেলা ও অতিরিক্ত কিছু বিক্রি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সেই হিসেবে সভাপতি ক্রয় করে নিয়েছেন হয়তো। তবে কত টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন প্রধান শিক্ষক তা বলতে পারেন নাই তিনি। বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো: নাসির উদ্দীন খান বলেন, শিক্ষকদের জানুয়ারি পর্যন্ত বেতন দেওয়া হয়েছে।তাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
স্কুলের ইটের সুরকি এক হাজার টাকা দিয়ে ট্রাক্টর ড্রাইভার এর নিকট থেকে ক্রয় করেছি। তবে বিক্রয়ের জন্য কোন রেজুলেশন করে কমিটির কোন সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি। প্রধান শিক্ষকের জন্য বাসভবন নির্মাণের জন্য কোন টেন্ডার হয়নি এবং কোন বাজেট হয়নি।
একটি কমিটির মাধ্যমে যখন যা প্রয়োজন খরচ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। এমনকি ভবন নির্মাণে এখন পর্যন্ত কত খরচ হয়েছে তিনি বলতে পারেনি।
 উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফয়সাল জানান,” এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। একজন তদন্ত কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর