শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন

বেলকুচির তাঁতারে শাড়ি দেশ-বিদেশ জুড়ে।

সবুজ সরকার,বেলকুচি(সিরাজগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ / ৪৪৫ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১

সিরাজগঞ্জ বেলকুচি উপজেলা তাঁত সমৃদ্ধ এলাকা এই তাঁতের শাড়ির সুনাম রয়েছে দেশ বিদেশ জুড়ে। বেলকুচির ঐতিহ্যবাহী তাঁতের সুতি শাড়ির পাশাপাশি জামদানি শাড়িও বেশ জনপ্রিয়। দশ পনেরো বছর ধরে পাওয়ারলুমে বেলকুচিতে তাঁত শাড়ি উৎপাদন শুরু হয়েছে ব্যাপকভাবে। একই সুতায় রঙ-ডিজাইন করে উৎপাদন হচ্ছে শাড়ি।

বেলকুচির তাঁতপল্লীগুলো ভোর থেকে রাত পর্যন্ত শ্রমিকরা পাওয়ারলুম-পিটলুম ও হস্তচালিত তাঁতে নিখুঁতভাবে তৈরি করছে জামদানী, সুতি কাতান, সুতি জামদানী, সিল্ক শাড়ি, রেশম শাড়ি, গ্যাস শাড়ি।
বেলকুচিতে হস্তচালিত তাঁতসহ বিভিন্ন শ্রেণির প্রায় ৬০ হাজার তাঁত রয়েছে। এসব হচ্ছে পিটলুম তাঁত ও পাওয়ারলুম তাঁত। এই তাঁতশিল্পের সঙ্গে মালিক পর্যায়ের ৮ হাজারেরও বেশি এবং শ্রমিক পর্যায়ে নারী-পুরুষ মিলিয়ে এক লাখেরও বেশি মানুষ যুক্ত।

একজন শ্রমিক সাধারণত হস্তচালিত তাঁতে একদিনে একটি শাড়ি বুনতে পারেন। আর পাওয়ারলুমে দিনে দুই টি শাড়ি বুনতে পারে তবে বেশি মাত্রার সূক্ষ্ম কারুকাজ করা শাড়ি বুনতে সময় লাগে বেশি। শাড়ি বুননের পর ফুল-তোলা বা নকশা-কাটার বাড়তি সুতা কাঁচি দিয়ে কেটে চূড়ান্তভাবে নকশা ফুটিয়ে তোলেন মহিলারা। একজন পুরুষ তাঁত শ্রমিক দিনে ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত ও মহিলা তাঁতশিল্পী বাড়ির কাজের ফাঁকে ফাঁকে চরকা কাটা ও নকশা কাটার কাজে দিনে ৫০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেলকুচি উপজেলার, তামাই, বওড়া, শেরনগর, গাড়ামাসী, চনন্দগাঁতী, চালা গ্রামের তাঁত কারখানাগুলোয় খটখট শব্দ। নারী পুরুষদের কেউবা নাটাই গুড়িয়ে সুতা কাটছে, নলিতে সুতা কাটছে, কেউবা কাপড় ছেটে কাপড় গুছিয়ে রাখছে।
এ অঞ্চলের তৈরি কাপড় দেশের নামি দামি ব্যান্ডের শো-রুমে যাচ্ছে। স্ট্যান্ডার্ড, আমানত শাহ্, আড়ংসহ দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলোতে। কোম্পানিগুলো অফ সিজনে তাদের দেয়া ডিজাইনে তাঁতিদের কাছ থেকে হাজার হাজার পিছ শাড়ি কম মূল্যে কিনে মজুদ করে রাখেন। পরে সিজনের সময় নিজেদের লেভেল লাগিয়ে দ্বিগুন দামে দেশের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি ভারতসহ বিশ্বের দেশে দেশে রপ্তানি করছে।

এছাড়াও তাঁতিরা তাদের উৎপাদিত তাঁত পণ্য জেলার শাহজাদপুর, এনায়েতপুর, সোহাগপুর, সিরাজগঞ্জ নিউমার্কেট ও টাঙ্গাইলের করটিয়ায় কাপড়ের হাটেও বিক্রি করছেন। এসব হাট থেকে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাইকার কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

বেলকুচির পাইকারি বিক্রেতা বসুন্ধারার রাজরাণী টেক্সটাইলের মালিক আব্দুল্লাহ জানান, দেশের দুর দুরান্ত থেকে পাইকারি শাড়ি কাপড় কেনার জন্য নিয়মিত ক্রেতারা আসেন। পাশাপাশি নতুন ব্যবসায়ী ও বিদেশিরাও আসছেন, সরাসরি বেলকুচিতে শাড়ি নিতে। আমাদের এখানে সীমিত লাভ করে শাড়ি কাপড় বিক্রি করা হয়। খুচরার চেয়ে পাইকারি বেশি বিক্রয় হয়।

দরদাম: জামদানী শাড়ী পাইকারি ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকা, কাতান শাড়ী ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকা, গ্যাস শাড়ী ১০০০ থেকে ৩০০০ টাকা, রেশম শাড়ী ১৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা, সুতি শাড়ী ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা দামে বিক্রি করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর