শিরোনাম
Cómo hacer un bong con una botella de agua sin papel de aluminio Качественная поставка бетона по Краснодару কালিয়াকৈরে পরিবেশ অধিদপ্তর ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২টি কারখানাকে জরিমান। বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে তুহিনের মুক্তির দাবীতে ডিমলায় বিক্ষোভ মিছিল। রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্ততায় কালিয়াকৈরে ক্যাম্পেইন ও লিফলেট বিতরণ। ঠাকুরগাঁওয়ে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসে বিনামুল্যে স্বাস্থ্যসেবা। নারী বিষয়ক সংস্কার আইন বাতিলের দাবিতে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ। গৃহবধু হত্যা মামলার আসামী না ধরলে বালিয়াডাঙ্গী থানা ঘেরাও করার ঘোষণা। দুর্গাপুরে বিএনপি’র বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে বিএনপির  বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা। কমলগঞ্জে বর্ণীলসাজে মণিপুরীদের ঐতিহ্যগত “লাই-হরাউবা” উৎসব।
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২১ অপরাহ্ন

রাণীশংকৈলে সরিষা ক্ষেতে থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌচাষীরা।

আনোয়ার হোসেন আকাশ,রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধিঃ / ১৯১ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৪

আনোয়ার হোসেন,রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈলের মাঠ এখন সরিষা ফুলে হলুদ রঙে সেজেছে। সে এক অপরূপ দৃশ্য। চোখ মেললেই মন জুড়িয়ে যায়। পুরো মাঠ যেন ঢেকে আছে হলুদ গালিচায়। সরিষার রূপ আর গন্ধে মাতোয়ারা চারিধার। মৌমাছি, প্রজাপতির অবিরাম খেলা গ্রামীণ জনপদকে আরো মুগ্ধ করে তুলেছে।  চাষিদের পদচারণায় প্রকৃতি যেমন সেজেছে ঠিক সেই সঙ্গে মেতে উঠেছেন মধু সংগ্রহে মৌয়ালরা। মৌমাছিরা সরিষার ফুলে ফুলে ঘুরে ঘুরে তুলে নেয় মধু, আর সেই মধু সংগ্রহ করতেই যেন মৌয়ালরা উৎসবে মেতেছেন।
রাণীশংকৈল কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে জমিতে সরষের আবাদ করা হয়েছে। এবার সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬০৫০ হেক্টর জমিতে। যা গতবছরের তুলনায় ৮৯০ হেক্টর জমিতে এই মৌসুমে বেশি সরিষার চাষাবাদ হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, মৌচাষিরা সাধারণত পছন্দের একটি সরিষা ক্ষেতের পাশে খোলা জায়গায় চাক ভরা বাক্স ফেলে রাখেন। একেকটি বাক্সে ৮-১০টি মোম দিয়ে তৈরি মৌচাকের ফ্রেম রাখা হয়।
প্রতিটি মৌ বাক্সের ভেতরে রাখা হয় রানি মৌমাছি। ফুল থেকে মৌমাছিরা মধু এনে বাক্সের ভেতরের চাকে জমা করে। বাক্সে একটি রানি মৌমাছি রাখা হয়৷ রানি মৌমাছির কারণে ওই বাক্সে মৌমাছিরা আসতে থাকে। চাকের বাক্সের মাঝখানের নিচে ছিদ্র করে রাখা হয়। সে পথ দিয়ে মৌমাছিরা আসা-যাওয়া করতে থাকে।
উপজেলার গোগর এলাকার মৌচাষি নজরুল ইসলাম জানান, সরিষা ক্ষেতে মধু চাষ খুবই লাভজনক। এতে কৃষক ও মধু চাষি— দু’পক্ষই লাভবান হন৷ বাক্সের ভেতরের চাকগুলো মধুতে পরিপূর্ণ হতে সময় লাগে ছয় থেকে সাত দিন। এরপর মধু চাষিরা বাক্স খুলে চাকের ফ্রেম থেকে মেশিনের মাধ্যমে মধু বের করে নেন। ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে মৌমাছির ব্যাপক পরাগায়নে সরিষার বাড়তি ফলন পান কৃষক, আর মৌচাষিরা পান মধু।
উপজেলার বলিদ্বারা,গাজিরহাট নন্দুয়ার, বসতপুর  লেহেম্বা, ধুলঝারি ধর্মগড়, মালিবস্তি কাশিপুরসহ বিভিন্ন ফসলি জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। এসব জমিতে সরিষার ফুল ফুটেছে আরো সপ্তাহ দুয়েক আগেই। এসব ফুলের মধু আহরণে নেমেছেন পেশাদার মৌয়ালারা। তাদের বাক্স থেকে দলে দলে উড়ে যাচ্ছে পোষা মৌমাছি। ঘুরে বেড়াচ্ছে ফুলে ফুলে। আর সংগ্রহ করছে মধু। মুখভর্তি মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা ফিরছে বাক্সে রাখা মৌচাকে। সেখানে সংগৃহীত মধু জমা করে আবার ফিরে যাচ্ছে সরিষা ক্ষেতে। এভাবে দিনব্যাপী মৌমাছিরা যেমন মধু সংগ্রহ করে। ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে পুরো জমির পরাগায়নেও সহায়তা করে। এ মৌসুমে মৌয়ালরা পোষা মৌমাছি দিয়ে প্রচুর মধু উৎপাদন করে যেমন লাভবান হচ্ছেন ঠিক তেমনি মৌমাছির ব্যাপক পরাগায়নে সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনায় চাষিরাও বাড়তি আয়ের আশা করছেন।
উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের মালিবস্তি এলাকার মাঠে পোষা মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহে আসা বীরগঞ্জ বলাকা মোড়ের পেশাদার মৌয়াল আব্দুস সাত্তার জানান, তিনি প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও পোষা মৌমাছির ৫০টি বাক্স নিয়ে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে এসেছেন। তিনি এ বছর প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ মন মধু সংগ্রহ করতে পারছেন।
উপজেলার নন্দুযার ইউনিয়নের গাজীরহাট এলাকার মাঠে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহে আসা ঠাকুরগাও মুরালিপুরের পেশাদার মৌয়াল আলআমিন হোসেন জানান, তিনি ১৫ দিন ধরে পোষা মৌমাছির ৪৫ টি বাক্স নিয়ে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করছেন। এখানে সরিষার ফুল থেকে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করে প্রতিকেজি ৪’শত টাকা দরে বিক্রি করে তিনি যেমন লাভবান হচ্ছেন ঠিক তেমনি মৌ মাছির ব্যাপক পরাগায়নে সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনায় স্থানীয় চাষিরাও খুশি হচ্ছেন।
এদিকে, সরিষা চাষিরা বলছেন, সরিষা ক্ষেতগুলো সাধারণত দেড় মাসের মতো ফুলে ফুলে ভরে থাকে। যতদিন ফুল থাকে, ততদিনই চলে মধু সংগ্রহ।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সহিদুল ইসলাম বলেন, তৈলবীজ জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় রাণীশংকৈলে কৃষকদের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারা তৈলজাতীয় ফসল বাড়ানোর জন্য সবধরনের কাজ করে যাচ্ছে। এই তৈলবীজ উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে লাভজনক শস্যবিন্যাস পদ্ধতিতে একই জমিতে বছরে অধিকবার ফসল ফলানোর কৌশল উদ্ভাবন করেছেন। এসব উদ্ভাবনী কৌশলে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করানোর ফলে এখন অনেক জমিতে বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষার আবাদ হচ্ছে। সরিষার আবাদ করে কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। আবার ওইসব সরিষার ফুল থেকে পোষা মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহে লাভবান হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পেশাদার মৌয়ালরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর