শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১১:১৭ অপরাহ্ন

রামগতি স্কুলের অফিস কক্ষে শিক্ষক দম্পত্তির বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন।

রিপোটারের / ৩২০ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বুধবার, ৬ অক্টোবর, ২০২১

সোহেল হোসেন লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরে রামগতি উপজেলার রামগতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে শিক্ষক দম্পত্তির বিবাহ বার্ষিকী পালন করা হয়েছে। গত রবিবার দুপুরে উপজেলার রামগতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে ওই বিদ্যালয়ের চলমান শ্রেণি কার্যক্রম চলাকালিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাহমিনা আক্তার রুবিনা তার স্বামীকে নিয়ে বিবাহ বার্ষিকী পালন করেন।

রুবিনার স্বামী বিবিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম কামাল উদ্দিন।
এ সময় একেএম কামাল উদ্দিনসহ উপজেলার চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চলমান রেখে প্রধান শিক্ষকগণ ওই বিবাহ বার্ষিকী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন। তাহমিনা আক্তার রুবিনা ও অনুষ্ঠানে যোগদান করা অতিথি চর হাসান হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহেল সামাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের নিজ নিজ আইডিতে অনুষ্ঠানের ছরি পোষ্ট করেন। পরে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রামগতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাহমিনা আক্তার রুবিনা ও বিবিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম কামাল উদ্দিন দম্পত্তির ৩২তম বিবাহ বার্ষিকী ছিল গত শনিবার (২ অক্টোবর)। এই উপলক্ষে তাহমিনা আক্তার রুবিনা রবিবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ২টার সময় বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ আরও অংশগ্রহন করেন রুবিনার স্বামী বিবিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম কামাল উদ্দিন, চর হাসান হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহেল সামাদ, রামগতি বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল উদ্দিন এবং রামগতি ষ্টেশন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস।
এই সময় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষের বাইরে হইছই করছিল।

ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ ওই চারজন প্রধান শিক্ষক বিবাহ বার্ষিকীর কেক কেটে একে অপরকে খাওয়াচ্ছেন। অফিস কক্ষের টেবিলে পোলাও, রোষ্ট, শসা, কোকসহ খাবার প্লেটে সাজিয়ে রেখেছেন।

প্রধান শিক্ষক সোহেল সামাদের ফেসবুক আইডিতে পোষ্ট করা একটি ছবিতে দেখা যায়, অনুষ্ঠানে তার মোবাইল দিয়ে তিনি একটি সেলফি তুলেছেন। ছবিতে মাসের নাম ৩ অক্টোবর ২০২১ এবং সময় ১৪:৩৫ (২:৩৫ মিনিট) মিনিট দেখা যাচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা অনুয়ায়ী বিদ্যালয় চলাকালিন সময় সকাল ৯ টা থেকে বিকেল সোয়া ৪ টা পর্যন্ত। সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে পৌনে ৪ টা পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রম চলবে। এর মধ্যে ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত দেড় ঘন্টা মধ্যহ্ন বিরতি রয়েছে। কিন্তু ছবিতে দেখা যাচ্ছে ২:৩৫ মিনিটি অনুষ্ঠান চলমান।

চারজন প্রধান শিক্ষক তাদের নিজ নিজ বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম চলাকালিন সময়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করে অন্য বিদ্যালয়ে একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেছেন।
এ নিয়ে উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
প্রতিক্রিয়া জানতে কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বললে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিদ্যালয় শ্রেণি কার্যক্রম চলাকালিন সময়ে অন্য কোন ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান করতে পারেন না। নিজ বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম চলাকালিন সময়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করে অন্য কোথায়ও শিক্ষকরা যেতে পারেন না। বিদ্যালয়ে কার্যক্রম চলাকালিন সময়ে সার্বক্ষনিক প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষককে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে সরকারি নিদের্শনা রয়েছে।

এই ছাড়াও কয়েকজন শিক্ষক জানান, তাহমিনা আক্তার রুবিনা রামগতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শুন্য থাকায় তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অথচ তিনি প্রধান শিক্ষক হিসাবে নামের সীল ব্যবহার করে অনিয়ম করছেন। এবিষয়ে অভিযুক্ত রামগতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাহমিনা আক্তার রুবিনার বক্তব্য জানতে ফোন করলে সাংবাদিক পরিচয়ে শুনে তার বাসার আমন্ত্রণ জানিয়ে ফোন কেটে দেন।

রুবিনার স্বামী ও বিবিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম কামাল উদ্দিনের কাছে বক্তব্য জানতে ফোন করলে সাংবাদিক পরিচয়ে শুনে তিনিও তার বাসার আমন্ত্রণ জানিয়ে ফোন কেটে দেন চরহাসান হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহেল সামাদ বলেন, ঐদিন ঐ স্কুলে একটা বিবাহ বার্ষিকীর অনুষ্ঠান হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি প্রয়োজনে সাংবাদিকদেরকেও তার বাসায় দাওয়াত খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আহসান বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে তিনি এমন ঘটনা শুনেছেন।খোঁজ খবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃমুনছুর আলী বলেন,স্কুলের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে এই ধরনের কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া যায়না।বিষয়টি বিষয়টি তিনি এখুনি তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানান


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর