Tag: ঝুঁকি

  • ঠাকুরগাঁওয়ে সাড়ে ৬ কোটি টাকায় নির্মিত ব্রিজ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার।

    ঠাকুরগাঁওয়ে সাড়ে ৬ কোটি টাকায় নির্মিত ব্রিজ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার।

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
    ঠাকুরগাঁওয়ে নদীতে তলিয়ে গেছে ব্রিজের এক পাশের সংযোগ সড়কের দেয়াল। গত তিন মাস ধরে ব্রিজটি পড়ে আছে অকেজো অবস্থায়। ফলে সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটি মানুষের কোনো উপকারে আসছে না। উল্টো ব্রিজের উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্থানীয় জনগণ।
    সংযোগ সড়কের বেহাল দশা নিয়ে স্থানীয়রা একাধিকবার এলজিইডিকে অবগত করলেও আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ। রাজাগাঁও, আসান নগর ও খড়িবাড়ি এলাকার অধিকাংশ মানুষই কৃষক।
    ২০১৯ সালে সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নের আসান নগরের খড়িবাড়ি এলাকায় লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের জন্য টাঙ্গন নদীর ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২৫০০.০০ মিটার দৈর্ঘ্যের পিএসসি গার্ডার ব্রিজটি নির্মাণ করেন। সাড়ে ৬ কোটি টাকার ব্যয়ে কাজটি পান স্থানীয় মো. জামাল হোসেন নামে এক ঠিকাদার। গত বছরের ২রা মার্চ ব্রিজটি উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলী সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ সেন।
    ব্রিজটি নির্মাণের পর থেকেই কয়েকবার সড়কের দেয়াল ও ব্লকসহ নদীতে ধসে যায়। স্থানীয়রা তৎক্ষণিকভাবে বালুর বস্তা দিয়ে সাময়িক সংস্কার করে ধস ঠেকায়। কিন্তু এবারের বর্ষা শুরু হওয়া মাত্রই আবারো ব্রিজটির পশ্চিম তীরের সড়কের একটি অংশ ব্লক সহ নদীতে তলিয়ে যায়। এতে সড়ক ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। এভাবে কয়দিন থাকার পর স্থানীয়রা বালুর বস্তা ও বাঁশ দিয়ে সংস্কার করে চলাচলের ব্যবস্থা করেন। তবে মানুষ ছাড়া বড় ধরণের কোন যানবাহন চলাচল করতে পারছে না এই ব্রিজ দিয়ে।
    এলাকাবাসীরা জানায়, এ ব্রিজ পার হয়ে কয়েকটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। আমাদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক। এলাকার কৃষিপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আনা-নেওয়া করতে প্রতিদিন শতাধিক মাহিন্দ্রা-পাওয়ার ট্রিলার গাড়ি চলাচল করে। তিন মাস আগে ব্রিজটির এক পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে ধসে যায়। এরপর থেকে ব্রিজের ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনো লাভ হয়নি।
    গাড়ি চালক হেলাল বলেন, গত তিন মাস ধরেই একটু একটু করে সড়কের দেয়াল পানির নিচে ধসে যাচ্ছিল। কয়েক দিন আগে যাত্রী নিয়ে এসে দেখলাম সড়কের অর্ধকে অংশই ভেঙে গেছে। পরে যাত্রী নামিয়ে গাড়ি পার করেছি। দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা না নিলে আমরা যানবাহন চালাতে পারবো না।
    স্থানীয় বাসিন্দা লোকমান আলী বলেন, কয়েকটি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য এক বছর আগে খড়িবাড়ি স্কুলের পশ্চিমে টাঙ্গন নদীর ওপর সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করে সরকার। কিন্তু কাজটিতে ভয়ঙ্করভাবে দুর্নীতি করা হয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় নির্মাণের বছর পার হতে না হতেই সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে গেছে। গত ৩ মাস ধরে ভাঙা সড়ক দিয়ে মানুষ চলাচল করছে কিন্তু এলজিইডির কেউ এনিয়ে কথা বলে না বা শুনে না।
    স্থানীয় কৃষক মাহিদুল ও আবুল হোসেন বলেন, ব্রিজ হওয়ার পর মাথায় করে নিয়ে বাজারে ফসল বিক্রি করতে হয়নি। ভ্যান, নসিমন ও গাড়িতে করে কৃষিপণ্য বাজারজাত করেছি। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে ব্রিজের এক পাশের সড়ক ভেঙে পড়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই বর্তমানে ফসল মাথায় করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে আমাদের। কোটি টাকার  ব্রিজটি এখন আমাদের কোনো কাজে লাগছে না। আমরা ব্রিজের এক পাশের সংযোগ সড়ক দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।
    স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন বিশ্বাস বলেন, ব্রিজটির এক পাশের সংযোগ সড়ক সংস্কার জরুরি। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সংস্কার করার জন্য। ইতোমধ্যে সংস্কারের জন্য ঢাকায় এস্টিমেট পাঠানো হয়েছে।
  • দেওয়ানগঞ্জে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই অচল সেতু পারাপার।

    দেওয়ানগঞ্জে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই অচল সেতু পারাপার।

    দেওয়ানগঞ্জে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই অচল সেতু পারাপার।


    জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলাধীন গয়ারডোবা খালের উপর নির্মিত সরু সেতুটি চলাচলের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিনিয়ত চলাচল করছে পথচারী মানুষ ও বিভিন্ন যানবাহন। সেতুতে ব্যাটারি চালিত রিকশা-ভ্যানসহ যেকোনো ধরনের গাড়ি উঠলেই অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অন্য সকল গাড়ি। একদিকে গাড়ি উঠলে অপরদিক থেকে না দেখা যাওয়ায় মাঝে মধ্যেই সেতুর মাঝামাঝি এসে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয় গাড়ি চালকরা। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসী ও সেতু দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীদের।

    এলজিইডির তথ্যমতে ২০০৬ সালে ৩৫ লাখ ২৫ হাজার ৫৯৭ টাকা ব্যয়ে গয়ারডোবা খালের ওপর পথচারী সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি নির্মাণের সময় দুই পাশে সরু কাঁচা রাস্তা ছিল। ২০১৭ সালে কাঠারবিল থেকে সানন্দবাড়ী পর্যন্ত পাকা সড়ক হলে সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়।

    স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আবুল হোসেন জানান, ‘এপাশে গাড়ি উঠলে ওপাশে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, এতে মানুষের অনেক ভোগান্তি হয়। ব্রীজের অনেক জায়গায় রেলিং ভাঙ্গার ফলে দুর্ঘটনার আশংকা অত্যাধিক। কিছুদিন আগে মোটরসাইকেল আরোহী এক ছেলে ব্রীজ থেকে নিচে পড়ে যায়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলেটি মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।’

    এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মহলে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর বিষয়টি জানালেও আজ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। সেতুটির প্রশস্থতা বৃদ্ধিসহ যানবাহন পারাপারের উপযোগী সেতু নির্মাণের দাবি জনসাধারণের।

    এ বিষয়ে চরআমখাওয়া ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ জিয়াউল হক জিয়া বলেন, কাঠারবিল-সানন্দবাড়ী সড়কের গয়ারডোবা সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মহলের নিকট জোড়ালো দাবি জানানো হবে, যাতে অতিসত্বর সরু এ সেতুটি পুনর্নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়।’

    এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘গয়ারডোবা ব্রীজটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এটি আমাদের এলজিইডির আওতাধীন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় অবস্থিত। এ ব্রীজটি ভেঙ্গে এখানে ১০০ মিটার বা তদূর্ধ্ব দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণে অগ্রাধিকার তালিকায় আমাদের সদর দপ্তরে একটি প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হয়েছে। এটা অনুমোদন সাপেক্ষে আমরা টেন্ডারের মাধ্যমে এখানে একটা ভারি যানবাহন চলার উপযোগী সুন্দর ব্রীজ নির্মাণ করতে পারবো।’

    উল্লেখ্য যে, প্রায় নয় বছর আগে থেকে গয়ারডোবা ব্রীজটির রেলিং ভাঙ্গতে শুরু করে। তিন-চার বছর আগে থেকে ভাঙ্গতে শুরু করে পাটাতন। তখন থেকেই সেতুটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে শত শত যানবাহন চলাচল করছে। রৌমারি, রাজীবপুর ও সানন্দবাড়ি এলাকার ঢাকায় যাতায়াতকারী ট্রেন যাত্রীদের বেশির ভাগই এ সেতু দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। অত্র এলাকার কষ্ট লাঘবে শীঘ্রই নতুন একটি ব্রীজ নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমনটাই দাবি সর্বস্তরের জনগণের।

  • জলবায়ু ঝূঁকি হ্রাসের দাবীতে সমুদ্র সৈকতে মানববন্ধন।

    জলবায়ু ঝূঁকি হ্রাসের দাবীতে সমুদ্র সৈকতে মানববন্ধন।

    জলবায়ু ঝূঁকি হ্রাসের দাবীতে সমুদ্র সৈকতে মানববন্ধন।


    ২৫ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ‘জলবায়ু ঝূঁকিতে উপকুল, চাই টেকসই উন্নয়ন’ এই শ্লোগান নিয়ে বেসরকারী সংগঠন নজরুল স্মৃতি সংসদ-এনএসএস শুক্রবার সকাল ১১ টায় সমুদ্র সৈকতে ঘন্টাব্যাপী এক মানববন্ধন ও মাক্স বিতরন কর্মসূচী পালন করেন।

    এনএসএস এর নির্বাহী পরিচালক শাহাবুদ্দিন পান্নার সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন ট্যুরিষ্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক,কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব, সাধারন সম্পাদকক কাজী সাঈদ, সাবেক সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু, এনএসএস এর প্রোগ্রাম পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক জাকির হোসেন ও সাংবাদিক খায়রুল বাশার বুলবুল প্রমুখ।

    এ সময় বক্তারা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝুঁকিতে থাকা উপকুল রক্ষার জন্য সরকারসহ বিশ্ববাসীর নিকট দাবী জানিয়েছেন। মানববন্ধন শেষে এনএসএস’র পক্ষ থেকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভ্রমনে আসা মহামারী করোনা প্রতিরোধে পর্যটকদের মধ্যে এক হাজার মাক্স বিতরণ করা হয়।

  • ভাঙা কালভার্টে ঝুঁকি নিয়ে ১০ গ্রামের মানুষের চলাচল।

    ভাঙা কালভার্টে ঝুঁকি নিয়ে ১০ গ্রামের মানুষের চলাচল।

    ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের লাহিড়ী বাজারের ধানহাটিতে প্রবেশপথের রাস্তায় থাকা কালভার্টের দক্ষিণ পাশের অংশ ধসে পড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন চাড়োল ও ধনতলা ইউনিয়নের ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
    সাত মাস ধরে ঝুঁকিপূর্ণ এ কালভার্ট দিয়ে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক যানবাহন নিয়মিত চলাচল করছে। এতে যেকোনো সময় পুরো কালভার্টটি ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। কালভার্টটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
    লাহিড়ী বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লাহিড়ী বাজারের পুরোনো সাইকেল হাটি থেকে পতিলাভাষা পর্যন্ত নতুন পাকা নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত পাথর বোঝাই ট্রাক যাতায়াতের সময় পুরোনো কালভার্টটি ধসে যায়। পরে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরে জানানো হয়। কিন্তু সাত মাসেও সংস্কারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
    ইজিবাইক চালক আমিরুল ইসলাম জানান, সপ্তাহে দুদিন লাহিড়ী বাজারে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। সোমবার ও শুক্রবার এখানে একটি গাড়ি পার হওয়ার সময় অন্য একটি গাড়িকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অনেক সময় বাজারে প্রবেশের জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে এখন অনেকেই বাধ্য হয়ে তিন কিলোমিটার ঘুরে উত্তরপাশের প্রবেশপথ দিয়ে বাজারে ঢুকছে বলে জানান তিনি।
    ধান বহনের কাজে ব্যবহার করা নছিমনের চালকেরা জানান, অতিরিক্ত তিন কিলোমিটার ঘুরে বাজারে ঢুকতে অতিরিক্ত তেল খরচ হচ্ছে। কিন্তু ভাড়া আগেরটাই নিতে হচ্ছে। কালভার্টটি সংস্কার না করায় তাঁরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে দাবি করেন।
    এ বিষয়ে কথা হলে চাড়োল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দিলিপ কুমার চ্যাটার্জী বাবু ও উপজেলা প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম  জানান, কালভার্টটি সংস্কারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে।
  • রাণীশংকৈল রামরাই দিঘিতে পাখিপ্রেমী পর্যটকদের ভীড়, ঝুঁকিতে অতিথি পাখিরা।

    রাণীশংকৈল রামরাই দিঘিতে পাখিপ্রেমী পর্যটকদের ভীড়, ঝুঁকিতে অতিথি পাখিরা।

    অন্যতম প্রাচীন ও সর্ব বৃহৎ রামরাই রাণীসাগর দিঘিতে অতিথি পাখিদের আগমনে মুখরিত এখন পুকুর প্রাঙ্গন।

    পাখি দেখতে দর্শনার্থীদের ভীড়। পুরো দিঘির জলাশয় সেজেছে নতুন সাজে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাখি ও জলাশয়ের প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম দৃশ্যে সত্যিই মনোমুগ্ধকর । প্রতিবছর শীত এলেই এসব পাখি এখানে এসে প্রকৃতিতে সাজাই নতুন সাজে।

    এটি হল অতিথি পাখিদের অভয়ারণ্য
    ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার একমাত্র সরকারি পর্যটন কেন্দ্র রামরাই দীঘি। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির সমাগম হয়েছে এখানে। পাখিদের কলকাকলিতে পুরো এলাকা মুখরিত। পাখি প্রেমি ও সৌন্দর্য পিপাসুরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত পর্যটন কেন্দ্র’র পাখিগুলোকে দেখার জন্য ছুটে আসেন। পাখি দেখতে পাওয়া যায়, শুনা যায় তাদের মুখের ডাক। কিন্তু পুকুরে মুরগীর লিটারের দুর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে উঠে এখানে ঘুরতে আসা মানুষগুলো।

    রামরাই রাণীসাগর দিঘিতে এখনোও প্রতিদিন ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে অতিথি পাখির দল। পাখিদের মুহুর্মুহু কলতানে পুরো দিঘি এলাকা পরিণত হয়েছে পাখির স্বর্গরাজ্যে। সন্ধ্যা নামলেই দিঘিপাড়ের লিচু বাগানে আশ্রয় নেয় এসব পাখি। ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় খাবারের সন্ধানে রামরাই দিঘিতে ভিড় জমায় তারা। পাখিদের এই মুহুর্মুহু কলতানের টানে প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে রামরাই দিঘিতে ছুটে আসছেন পাখিপ্রেমী পর্যটকরা ।

    এ দেশের নদ-নদী, হাওর-বাওড়ের ভালোবাসার টানে লক্ষ হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে রামরায় দিঘিতে আসে তারা। আত্মীয়দের সঙ্গে যেমন আত্মার সম্পর্ক গড়ে ওঠে, এখানকার ভূপ্রকৃতির সঙ্গেও তেমনি আত্মীয়তার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে এসব অতিথি পাখি।

    প্রচন্ড শীতের কারণে সাইবার অঞ্চল থেকে আসা পাখিগুলো নোংরা ময়লা আবর্জনা দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে থেকে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে। পাখিগুলো সারাদিন রামরাই দীঘি বা রাণীসাগরে আহার করে সন্ধ্যা হলে আসে পাশের জলাশয়গুলোতে আশ্রয় নেয়। সকাল হলেই আবার রাণীসাগরে ফিরে এসে খাবার সংগ্রহ করে।

    উপজেলা শহর থেকে ৪ কিমি দূরে উত্তরগাঁও গ্রামের নিকটেই বরেন্দ্র অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তর জলাশয় রামরাই দিঘীর অবস্থান। শহর থেকে যে কোন যানবাহনে ১০ থেকে ১৫ টাকা ভাড়া নেয়। যেতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিটের রাস্তা।

    সরেজমিনে কথা হয় সৈয়দপুরের সেলিনা বেগমের সাথে। তিনি প্রতিবেদককে জানান, শুনেছিলাম রাণীসাগরে অনেক পাখি আসে। তাই দেখতে এসেছিলাম। এখানে এসে মনটা ভরে গেল। পুকুরের চারিদিকের শত শত লিচু গাছ দেখতে বেশ মনোরম। পুকুরের নীচ থেকে পাড়ের দিকে তাকালে মনে হয় আকাশের সাথে মিশে আছে।

    কথা হয় ৬৫ বছরের  সোলেমান আলীর সাথে তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, শত শত বছরের প্রাচীন ঐতিহ্য রামরাই দিঘীতে মুরগীর লিটার দিয়ে এখানকার পানি ময়লা করা হচ্ছে। পুকুরের পানিতে মানুষ গোসল করতে পারে না। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

    দিঘি পাশের স্থানীয়রা জানান, আমাদের এখানে যে অতিথি পাখি আসছে তার নাম ছোট সরালি। শীতের শুরু থেকে বহু মানুষ আসছেন এসব অতিথি পাখি দেখার জন্য। অনেক সময় অনেক পাখি শিকারিরাও আসেন পাখি শিকারের উদ্দেশ্যে আমরা সবসময় তাদের নিরুৎসাহিত করি কারণ অতিথি পাখিরা আমাদের দেশে আসে অতিথি হয়ে।

    পুকুরের পশ্চিম পাড়ে হোসেনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়। কথা হয় চেয়ারম্যান মাহবুব আলমের সাথে। তিনি বলেন, অতিথি পাখিরা প্রতি বছর দুর দুরান্তের লোকজন এখানে পাখিগুলো দেখতে আসে। কাউকে পাখি শিকার করতে দেওয়া হয়না। রামরাই দিঘীকে পুরোপুরিভাবে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে।

    রাণীশংকৈল উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইন্দ্রজিৎ সাহা জানান, রামরাই দিঘি রাণীশংকৈলের জন্য একটি অহংকার। এটি রাণীশংকৈলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে রাখছে।

    এই ছোট সরালি জাতের অতিথি পাখি আমাদের এই রামরাই দীঘিতে প্রতি শীতকালেই আসে। এটি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ইতোমধ্যে এটি রক্ষণাবেক্ষনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে

  • ডাম্পিং পয়েন্ট না থাকায় স্বাস্থ্য ঝঁকিতে উল্লাপাড়া পৌরসভার নাগরিক

    ডাম্পিং পয়েন্ট না থাকায় স্বাস্থ্য ঝঁকিতে উল্লাপাড়া পৌরসভার নাগরিক

    উল্লাপাড়া পৌরসভা ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার সময় এটি ছিল ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত। বর্তমানে এই পৌরসভা প্রথম শ্রেণিতে উন্নিত হয়েছে। দীর্ঘ ২৭ বছরে এখানে জনসংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। কিন্তু বাড়েনি নাগরিক সুবিধা। দীর্ঘদিনেও তৈরি হয়নি আর্বজনা ফেলার নির্দিষ্ট ডাম্পিং পয়েন্ট।

    পৌরবাসীর অভিযোগ যেখানে সেখানে বর্জ্য ও আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। বিশেষ করে পৌর শহরেরবা গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে বিবেচিত এইচ.টি. ইমাম পৌর মুক্ত মঞ্চের পাশে, ঝিকিড়া পাটবন্দরের পাশে, বিজ্ঞান কলেজের পাশে ও পৌর বাস টার্মিনালের পাশে ফেলা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য। ফলে দুর্গন্ধে পাশের রাস্তা দিয়ে পৌরবাসীর চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা পৌরবাসী পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা করার জন্য অনেকবার আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু এতে সাড়া দেয়নি কর্তৃপক্ষ।

    সরকারি আকবর আলী কলেজের শিক্ষার্থী মো. আব্দুল আলিম, আতিকুল ইসলাম, শারমিন খাতুন জানান, এই পথে যাতায়াতের সময় খুব দুর্গন্ধ সহ্য করতে হয়। এ কারণে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হয়। তারা অবিলম্বে একটি নির্দিষ্ট ডাম্পিং পয়েন্ট স্থাপনের জন্য অনুরোধ জানান।

    এ ব্যাপারে পৌর মেয়র এস এম নজরুল ইসলাম পৌরসভায় নির্দিষ্ট ডাম্পিং পয়েন্ট তৈরি না করায় নাগরিকদের বিভিন্নমুখী কষ্ট ও দুভোর্গের কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, আসলেই পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে বর্জ্য-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এটি স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই ডাম্পিং পয়েন্ট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। খুব শিগগিরই এটি বাস্তবায়িত হবে। নিরসন হবে পৌরবাসীর অনেক দিনের দুভোর্গ।

  • করোনা ভ্যাকসিন নিতে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ নৌ-পারাপার,মানছে না স্বাস্থ্যবিধি।

    করোনা ভ্যাকসিন নিতে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ নৌ-পারাপার,মানছে না স্বাস্থ্যবিধি।

    সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌ-পারাপার হতে হচ্ছে।এতে একদিকর সংকটাপন্ন হচ্ছে জীবন অন্যদিকে বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি ।

    গত ১২ জানুয়ারী (বুধবার) কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের নাটুয়ারপাড়া কে.বি.বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়,ঘোড়াগাছা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়,খাষশুড়িবেড় বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় সহ খাসরাজবাড়ি,চরগিরিশ,তেকানি ও নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭ম শ্রেণী থেকে ১০ ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের টিকা দিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।

    নদী বিধৌত এলাকা হবার সুবাধে সাধারণ ভাবেই ঝুঁকি নিয়ে নৌকা পার হতে হয় যাত্রীদের ,এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে একই নৌকাতে ২০০-২৫০ জন শিক্ষার্থীকে চাপাচাপি করে নৌকাতে পারাপার করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। নৌ-পথে নৌকাতে ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় আট গুণ অতিরিক্ত শিক্ষার্থী নিয়ে পারাপারে একদিকে শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে চরম ঝুঁকিতে অন্যদিকে বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।

    এসব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেণীর একাধিক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,”আমরা এক নৌকাতে এত ছাত্র-ছাত্রী উঠতে অস্বীকার করলে,স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক জোড় করে এক নৌকাতে চাপাচাপি করে উঠায়”

    ঘটনাসূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্স থেকে করোনা ভাইরাসের টিকা দিয়ে ফেরার পথে যমুনা নদীতে খাষশুড়িবেড় বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই নৌকার সাথে ধাক্কা লেগে ৯ম শ্রেণীর ঝুমুর খাতুন, এসএসসি পরীক্ষার্থী নুপুর,৭ম শ্রেণীর শারমিন সহ চার জন মেয়ে পানিতে পড়ে যায়। এসময় নৌকাতে থাকা অপর ছাত্ররা পানিতে পড়া ছাত্রীদের উদ্ধার করে।আহত ছাত্রীদের নিজ নিজ বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানা যায়।

    জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌ -পারাপার বিষয়ে জানতে চাইলে নাটুয়ারপাড়া কে.বি.বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন,” এতো ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়া জীবনের জন্য হুমকি স্বরুপ “তা ছাড়া এক নৌকাতে এতো চাপাচাপি করে নৌ পারাপারে স্বাস্হ্যবিধি বিঘ্নিত হচ্ছে”।

    অন্যদিকে ঘোড়াগাছা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন,”শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে এসে টিকা কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোড় তদবির করা হলেও কোন সুফল আসেনি”।

    এ বিষয়ে কাজিপুর উপজেলা স্বাস্হ্য কর্মকর্তা ডা.মোমেনা পারভীন বলেন,”শিক্ষার্থীদের কিভাবে পার করবেন?এটা স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ব্যাপার,তবে এই ভ্যাকসিন এসি ছাড়া রাখা সম্ভব না হওয়াতে প্রতি স্কুলে গিয়ে টিকা দেওয়া যাচ্ছে না”।

    কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দীকির সাথে এ বিষয় নিয়ে জানতে চাইলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

    জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌ পারাপার হয়ে করোনা ভাইরাসের টিকা দিতে গিয়ে জীবন সংকটে পড়ায় অনেক অভিভাবক তাদের কোমলমতি সন্তানদের টিকা দিতে অনীহা দেখাচ্ছে বলেও জানা যায়।

    উল্লেখ্য,সারাদেশে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের করোনা ভাইরাসের ফাইজার টিকাদান কর্মসূচী ধারাবাহিক ভাবে চলমান থাকবে ।