শিরোনাম
দুর্গাপুরে বিএনপি’র বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে বিএনপির  বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা। Slot Scatter Hitam: Apa yang Membuatnya Menjadi Pilihan Utama Para Pemain? কমলগঞ্জে বর্ণীলসাজে মণিপুরীদের ঐতিহ্যগত “লাই-হরাউবা” উৎসব। কালিয়াকৈরে ফুটওভার ব্রিজে লাইটিং ব্যবস্থা না থাকায় ডাকাতির আতংকে পথচারী। A cosa dovremmo prestare attenzione quando utilizziamo i giocattoli anali? কুকুরের আক্রমণ থেকে বিপন্ন লজ্জাবতী বানর উদ্ধার। অপহরণের ৫ বছর পর বাবা–মায়ের কাছে ফিরল স্কুলছাত্র সামাউন। কালিয়াকৈরে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিবসহ দুই শিক্ষককে অব্যাহতি। শ্রীমঙ্গলের সেন্ট যোসেফ গীর্জায় উৎসবমুখর পরিবেশে “ইষ্টার সানডে”পালিত। টিকটকে পরিচয়ে বিয়ে করা স্ত্রীকে রেখে পালিয়ে যাওয়া স্বামীর খোঁজে মৌলভীবাজারে তরুণী।
সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন

ক্যামিকেলে দূষিত করতোয়ার পানি; হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য-ভোরের কণ্ঠ। 

মোঃ জহুরুল ইসলাম,শাহজাদপুর(সিরাজগঞ্জ)প্রতিনিধি / ৩১৯ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

ক্যামিকেলে দূষিত করতোয়ার পানি; হুমকির মুখে জীববৈচিত্র দেশের তাঁতশিল্পের কেন্দ্রবিন্দু শাহজাদপুরের নদী তীরবর্তী শতশত প্রসেস মিলের বর্জ্যে মারাত্মক দূষণের কবলে পড়েছে করতোয়া নদী। এলাকার বেশিরভাগ প্রসেস মিলকারখানা ও সুতা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় ইটিপি প্লান্ট না থাকায় কেমিকেল মিশ্রিত দূষিত পানি সরাসরি নদীতে পড়ছে। ফলে করতোয়া নদীর পানি দূষিত হয়ে নদী তীরবর্তী বিস্তৃর্ণ এলাকার জীব বৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে। ফসলি জমিতে সেঁচকাজে দূষিত কেমিকেল মিশ্রিত পানি নদী থেকে তুলে ব্যবহারের ফলে ফসলের উৎপাদন ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। এলাকাবাসী, পশুপাখি ও দেশিয় প্রজাতির মাছসহ বিভিন্ন প্রাণীর উপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে এলাকাবাসী। অপরিকল্পিতভাবে নদীর জায়গা দখল করে নির্মিত ডাইং, প্রসেস মিল ও তাঁতীদের ব্যক্তিগত রং কারখানায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কেমিকেল মিশ্রিত দূষিত পানি পরিশোধন না করে অপসারণ করায় অনেক স্থানে পানির রঙ বিবর্ণ রূপ ধারণ করেছে এবং তখন নদীর জায়গা দখল করায় নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় অল্প বর্ষায়ই প্লাবিত হচ্ছে নদী পাড়ের ফসলী জমি। এসব প্রসেস মিলের বর্জ্যে করতোয়া ও খুকনীর রূপনাই’র নালা ও খাল-বিলে দেশীয় প্রজাতির মাছের বসবাস ও প্রজননের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে।

দূষিত পানি ব্যবহারে এলাকাবাসী চর্মরোগসহ নানা পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অথচ তাঁতসমৃদ্ধ এ জনপদের শতশত প্রসেস মিলের বর্জ্য পরিকল্পিতভাবে শোধানাগারে পরিশোধনে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও কেউই মানছে না সেই নির্দেশনা। করতোয়া নদী তীরবর্তী এলাকাবাসী জানায়, শাহজাদপুরসহ নদী তীরবর্তী তাঁতসমৃদ্ধ এলাকায় শতশত প্রসেস মিল, সুতার ডাইং ও তাঁতীদের ব্যক্তিগত রঙ-সুতার কারখানায় ব্যবহৃত কেমিকেলের দূষিত বর্জ্য পরিশোধন ছাড়াই সরাসরি করতোয়া নদীতে ফেলা হচ্ছে। দূষিত বর্জ্যে পানি দূষণে মরে যাচ্ছে মাছ, পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এলাকাবাসী করতোয়া নদীর দূষিত, বিষাক্ত, দুর্গন্ধযুক্ত পঁচা পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ কারণে এলাকার হাজার হাজার মানুষ তীব্র স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। দূষিত পানির কারণে বিভিন্ন ফসল ও সবজির ফলনও কমে যাচ্ছে।

তাঁতশিল্পের ওপর নির্ভর করে এ অঞ্চলে ব্যাঙের ছাতার মতো প্রসেস মিল গড়ে উঠলেও বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। করা হয়নি নিয়মিত তদারকীও। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে মাঝে মধ্যে এসে দুএকজনকে জরিমানা করলেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনেনি এপর্যন্ত। যে কারণে শোধানগার গড়ে ওঠেনি এখনও কোন প্রসেস মিলে। এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে একদিকে যেমন নদী-নালা, খাল-বিল ও জলাশয় দূষণের হাত থেকে রেহাই পাবে, অন্য দিকে জীববৈচিত্রও ক্ষতিকর প্রভাব হতে মুক্ত হবে। বাংলার প্রাচীনতম নদী করতোয়া।

এলাকাবাসী আরও জানায়, তাঁতশিল্পসমৃদ্ধ এ জনপদে শতশত ডাইং, প্রসেস মিল ও ব্যক্তিগত রং কারখানা রয়েছে। একেকটি ডাইংয়ের প্রতি ব্রয়লারে দিনে প্রায় ৪০০ বান্ডিল সুতা প্রসেস করা হচ্ছে। ওই ৪০০ বান্ডিল সুতা প্রসেস করতে সোডা, সাবান, হুইল পাউডার, নিসপেল তেল, কস্টিক, মাসরাইজড ওয়েল, বিলিচিং পাউডার, নীল, গেøসসহ নানা কেমিকেল ব্যবহার করা হচ্ছে। বয়েল পানির সাথে বিভিন্ন ধরনের কেমিকেল ব্যবহার করে সূতা ও রঙ প্রক্রিয়াজাত করে দূষিত পানি সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। পানি দূষণের ফলে নদী-নালা, খাল-বিল ও জলাশয়ে আর আগের মতো দেশিয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। অতীতে করতোয়া নদীসহ তীরবর্তী জলাশয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির পদচারণা পরিলক্ষিত হলেও বর্তমানে তা আর দেখা যাচ্ছে না। গবাদিপশু দূষিত পানি পান করায় স্বাস্থ্যহানী ঘটছে ও দুধের উৎপাদনও কমে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মোঃ শামসুজ্জোহা জানান, ‘ইতোপূর্বেও এসব প্রসেস মিল মালিকদের অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে ও সর্তক করা হয়েছে। অচিরেই দূষণকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।’ অন্যদিকে, করতোয়া নদীকে দূষণের কবল থেকে রক্ষা করে পরিবেশের ভারসাম্যতা রক্ষা আর জীব বৈচিত্রের সুরক্ষায় সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর