সাভারে হলুদ খামে ম্যানেজ করে ফসলি জমি দখল করে গড়ে উঠেছে ইট ভাটা-ভোরের কণ্ঠ।

নিয়ম নীতির তুয়াক্কা না করে সাভার আমিন বাজার সালেহপুর ফসলি জমি দখল করে গড়ে উঠেছে হানিফ এন্টারপ্রাইজ এর মালিক কপিল উদ্দিন সাহেবের অসংখ্য ইটের ভাটা।

শুক্রবার ( ৯ এপ্রিল ) ভোরের কন্ঠ এর রিপোর্টার এর তথ্যনুসন্ধানে জানা যায় যে- আমিন বাজার সালেহপুর কপিল সাহেবের ১০ – ১২ টি ইট ভাটা আছে। তার কিছু কিছু ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ এবং গাড়ির টায়ার পুড়ানো হয়। এতে মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে পরিবেশ। তার সাথে আইন অমান্য করে দিনের পর দিন তুরাগ নদীর মাটি কেটে এবং ফসলি জমি কেটে তার ইটের ভাটায় মাটি ব্যবহার করছে।

তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা যায় যে তার ১০-১২ টি ভাটায় প্রায় ৩০০০ শ্রমিক কাজ করে তার মধ্যে শিশু শ্রমিক আছে ৪০০ জন। এতে নীরব ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক কিছু স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ এর মালিক কপিল সাহেব এতোগুলি ইটের ভাটায় অর্ধেক ভাটায় কোন লাইসেন্স নেই। যেগুলো লাইসেন্স আছে তার তার অনেকটিতে আবার নবায়ন করে নাই। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র নাই। ফিক্সড চিমনি ভাটার বৈধতা থাকলে ২০১৩ সালের দিকে এ ভাটা নিষিদ্ধ করা হয়। সে হিসেবে শুধুমাত্র জিকজ্যাক ভাটা বৈধ।

সাভার আমিন বাজার সালেহপুর হানিফ এন্টারপ্রাইজ এর মালিক কপিল সাহেব এ ধরনের ভাটা মাত্র ২ টি বাকি ১০ টি ভাটা চলছে অবৈধভাবে।

জানা যায় যে- বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ ( সংশোধিত ২০১০ ) এবং পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ১৯৯৭ এর ধারা অনুযায়ী কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রথমবার সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা, দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে ১ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ও সাজার বিধান রাখা হয়েছে। তৃতীয়বার করলে নিবন্ধন বাতিল ও ভাটা বাজেয়াপ্ত করার ও বিধান রাখা হয়েছে। কাগজে ও কলমে এসব আইনের কঠোর নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে এর প্রয়োগ নেই।

ইট ভাটার জ্বালানি হিসেবে কয়লার পরিবর্তে কাঠ এবং গাড়ির টায়ার পোড়ানোর বিষয়ে তার সাথে শিশু শ্রমিক নিয়োগে হানিফ এন্টারপ্রাইজ এর মালিক কপিল সাহেবের ভাটার ম্যানেজার মিঠু আহমেদ এর থেকে তথ্য জানতে চাইলে প্রথমে তিনি ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে দ্বিদ্বাবোধ করেন, এক পর্যায়ে ক্যামেরা বন্ধ রেখে মুখ খুলতে রাজি হয়।

কপিল সাহেবের ম্যনেজার মিঠু আহমেদ বলেন যে, চাহিদার তুলনায় কয়লার সরবরাহ কম। সে সঙ্গে দাম ও বেশি তাই কয়লা দিয়ে ইট পুড়িয়ে লাভবান হওয়া যায় না।

সরকার যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ কয়লা আমদানির ব্যবস্থা ও দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে পারে, তবে আমাদের ভাটায় কাঠ এবং গাড়ির টায়ার পোড়ানো বন্ধ করা যাবে। তার সাথে শিশু শ্রমিক নিয়োগের ব্যাপারে বলেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিককে প্রতিদিন দিতে হয় ৪৫০-৫০০ টাকা আর একজন শিশু শ্রমিককে ১০০-১৫০ টাকা দিলে হয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন,প্রাপ্ত শ্রমিক দিয়ে যে কাজ হয়, একজন শিশু শ্রমিক দিয়ে ও তার দ্বিগুণ করা যায় এবং আমাদের টাকা ও বেশ হয়। এ আর কি। শিশু শ্রমিক নিয়োগের ব্যাপারে কপিল সাহেব জানে কিনা জানতে চাইলে, মিঠু আহমেদ বলেন – ভাটা তার তিনি তো অবশ্যই জানেন, ম্যানেজার মিঠু আহমেদ সাংবাদিকদের আরো বলেন – আপনারা এতো কিছু জেনে লাভ হবে না কারণ আমাদের এম ডি কপিল সাহেব প্রতি মাসে স্থানীয় প্রশাসনকে একটি করে হলুদ খাম দিয়ে ম্যানেজ করে আসছে। কি সে হলুদ খাম-এই তথ্য বাহির করার জন্য জেলার প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আর্কষণ করছি।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *