নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমী তিথিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে কুমারী পূজা। গতকাল দুপুরে উপজেলার সাতগাঁও রঘুনাথপুর শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়িতে এই কুমারী পূজাটি অনুষ্ঠিত হয়। এবার দেবী দুর্গার মালিনি রুপে পূজা করা হয় সাত বছরের অর্পা চক্রবর্তীকে। অর্পা উপজেলার বনগাঁও গ্রামের নুপুর চক্রবর্তী ও অনুরাধা চক্রবর্তীর মেয়ে। সে একটি স্কুলে ২য় শ্রেনীতে পড়ে। বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪ ইং, শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কুমারী পূজা দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা মন্দির প্রাঙ্গনে ভীড় জমিয়েছেন। দুপুর ১২ টার দিকে পুজিত কুমারী শিশুটিকে নতুন কাপড় পড়িয়ে দেবীর সাজে সজ্জিত করে কুমারী মন্দিরে বসানো হয়। সেখানে দেবীর পূজা শুরু করেন পুরোহিতগণ। পূজা শেষে ভক্তবৃন্দের জন্য দেবীকে বসিয়ে রাখা হয়। তখন সবাই দেবী প্রণাম জানান।
আয়োজকরা বলছেন, কুমারী পূজা হচ্ছে দেবীর বাস্তব রুপের পূজা। ১ বছর থেকে ১৬ বছর বয়সের নারী শিশুকে দেবী রুপে পূজা করা হয়ে থাকে। প্রতিবছরই দেবীর আলাদা আলাদা নাম নিয়ে এই পূজা করা হয়। ভক্তরা বিশ্বাস করেন কুমারী পূজার মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে আরাধনা করলে তা পুর্ণ হয়।
স্থানীয় লেখক ও গবেষক নৃপেন্দ্র লাল দাশ বলেন, জগত মাতার শুদ্ধতার প্রতিক হচ্ছেন কুমারী। স্বামী বিবেকানন্দন প্রথম কুমারী পূজা শুরু করেছিলেন। মানুষের মধ্যেই মা দুর্গা রয়েছেন, এই বোধটাকেই সাধারণ মানুষের প্রচার করার জন্য কুমারী পূজা শুরু করা হয়েছিলো।
কুমারী পূজা দেখতে আসা শ্রীমঙ্গলের সবিতা ফার্মেসী মালিক অপু পাল বলেন, কুমারী পূজা দেখতে এসেছি। মায়ের কাছে প্রার্থনা করেছি, মা যেন আমাদের সকল অশুভ শক্তি থেকে দূরে রাখেন। জগতের সকলের মঙ্গল করেন। মঙ্গলময়ী মা যেন সকলের ভালো করেন।
তিনি বলেন, আমাদের শাস্ত্রে কুমারী পূজা করার নিয়মনীতি বলা আছে। কুমারীরা হচ্ছে পবিত্রতার প্রতিক। কুমারী পূজা করলে মা দুর্গারই পূজা করা হয়।
শ্রীশ্রী আনন্দময়ী কালিবাড়ি পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রজত চক্রবর্তী বলেন, আনন্দময়ী কালীবাড়িতে কুমারী পূজা গত ২৭ বছর ধরে হয়ে আসছে। এটি মৌলভীবাজার জেলায় একমাত্র কুমারী পূজা। বাংলাদেশের চার থেকে পাচটি স্থানে কুমারী পূজা করা হয়। এরমধ্যে সিলেট বিভাগে দুটি। নারীকে দেবী জ্ঞানে আরাধনা করে কুমারী পূজা করা হয় বলে জানান তিনি।
Post Views: 71